সাধারণ খাবার খেলেও হচ্ছে অম্বল? ভিজানো চিয়া বীজে মিলতে পারে সমাধান
অনেকেরই প্রতিদিন চিয়া বীজ পানিতেভিজিয়ে খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। কেউ কেউ পেট ঠান্ডা রাখতে এই পানি খান, আবার অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে চিয়া বীজ ব্যবহার করেন।
পুষ্টিবিদদের মতে, ওজন কমাতে খাদ্যতালিকায় নানা রকম বীজের সঙ্গে চিয়া বীজও রাখা উচিত। তুলসী বীজের মতো দেখতে চিয়া শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণেই নয়, শরীরের জন্য আরও নানা উপকার করে। তবে সরাসরি না খেয়ে, পানিতে ভিজিয়ে খেলে এর পুষ্টিগুণ আরও ভালোভাবে পাওয়া যায়। এতে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ শরীরের হজমের সমস্যাও দূর করে। চলুন দেখে নিই, চিয়া বীজের আরও কী কী উপকারিতা রয়েছে:
১) ফাইবারে ভরপুর
চিয়া বীজের প্রায় অর্ধেকই ফাইবার দিয়ে তৈরি, যা অন্ত্রের জন্য দারুণ উপকারী। ভালো অন্ত্রের স্বাস্থ্য মানেই শরীরের বিপাকক্রিয়াও স্বাভাবিক থাকে।
২) ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
পানিতে ভিজে চিয়া বীজ ফুলে উঠে ভারী হয়ে যায়, ফলে দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি অনুভূত হয়। এতে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে, ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
৩) প্রোটিনের ভালো উৎস
চিয়া বীজে প্রায় ১৪% প্রোটিন থাকে এবং এতে রয়েছে প্রচুর অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শরীরের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে।
৪) হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষা
চিয়া বীজে থাকা ‘আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড’ (ALA), যা একটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকিও হ্রাস পায়।
৫) ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
চিয়া বীজ খেলে খাবারের পর রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায় না। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বেশ উপকারী।
৬) হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায়
চিয়া বীজে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাসের মতো খনিজ রয়েছে, যা হাড় মজবুত করে। যাঁরা দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে পারেন না, তাঁদের জন্য চিয়া বীজ হতে পারে বিকল্প সমাধান।
৭) হজমশক্তি উন্নত করে
ফাইবার সমৃদ্ধ চিয়া হজম প্রক্রিয়া সহজ করে। সকালে চিয়া ভেজানো পানি খেলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং হজম ব্যবস্থাও মজবুত হয়।

চিয়া বীজ খাওয়ার সাধারণ নিয়ম হলো:
ভিজিয়ে খাওয়া:
চিয়া বীজ সরাসরি খাওয়ার বদলে জলে ভিজিয়ে খাওয়া সবচেয়ে ভালো। কারণ ভিজলে এটি ফুলে ওঠে এবং সহজে হজম হয়।
১–২ চামচ চিয়া বীজ এক গ্লাস পানি বা দুধে ২০–৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে তারপর খেতে হয়। চাইলে রাতভরও ভিজিয়ে রাখা যায়।
খাদ্যে মিশিয়ে খাওয়া:
চিয়া বীজ স্মুদি, ওটস, দই, সালাদ, জুস বা বিভিন্ন ডেসার্টেও মিশিয়ে খাওয়া যায়।
পানির পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখা:
চিয়া বীজ ভিজে ফুলে যায়, তাই পর্যাপ্ত পানি বা তরল থাকতে হবে, না হলে পেট ভারী বা অস্বস্তি হতে পারে।
প্রতিদিনের পরিমাণ:
দিনে ১–২ টেবিল চামচ চিয়া বীজ খাওয়া যথেষ্ট। অতিরিক্ত খেলে গ্যাস বা পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে।
খালি পেটে বা খাবারের সাথে:
সকালে খালি পেটে অথবা খাবারের সাথে খাওয়া সবচেয়ে ভালো উপকার দেয়, বিশেষ করে ওজন কমাতে ও হজম ভালো রাখতে।